মুক্তিপ্রাপ্ত লোকদের সংখ্যা
তখন উক্ত জনপদে লূত-এর পরিবারটি ব্যতীত মুসলমান ছিল না। আল্লাহ বলেন, فَمَا وَجَدْنَا فِيْهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ- ‘আমি সেখানে একটি বাড়ী ব্যতীত কোন মুসলমান পাইনি’ (যারিয়াত ৫১/৩৬)। কুরআনী বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত গজব হতে মাত্র লূত-এর পরিবারটি নাজাত পেয়েছিল। তাঁর স্ত্রী ব্যতীত’ (আ‘রাফ ৭/৮৩)। তাফসীরবিদগণ বলেন, লূত-এর পরিবারের মধ্যে কেবল তাঁর দু’মেয়ে মুসলমান হয়েছিল। তবে লূত-এর কওমের নেতারা লূত-কে সমাজ থেকে বের করে দেবার যে হুমকি দেয়, সেখানে তারা বহুবচন ব্যবহার করে বলেছিল أَخْرِجُوْهُم مِّن قَرْيَتِكُمْ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَّتَطَهَّرُونَ. ‘এদেরকে তোমাদের শহর থেকে বের করে দাও। কেননা এই লোকগুলি সর্বদা পবিত্র থাকতে চায়’ (আ‘রাফ ৭/৮২; নমল ২৭/৫৬)। এতদ্ব্যতীত শহর থেকে বের হবার সময় আল্লাহ লূতকে ‘সবার পিছনে’ থাকতে বলেন (হিজর ১৫/৬৫)। অন্যত্র বলা হয়েছে فَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ أَجْمَعِينَ ‘অতঃপর আমি তাকে ও তার পরিবার সবাইকে নাজাত দিলাম’ (শো‘আরা ২৬/১৭০)। এখানে أجمعين বা ‘সবাইকে’ শব্দের মধ্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ঈমানদারগণের সংখ্যা বেশ কিছু ছিল। অতএব এখানে লূত-এর ‘আহ্ল’ (আ‘রাফ ৮৩; হূদ ৮১; নমল ৫৭; ক্বামার ৩৪) বা পরিবার বলতে লূত-এর দাওয়াত কবুলকারী ঈমানদারগণকে সম্মিলিতভাবে ‘আহলে ঈমান’ বা ‘একটি ঈমানদার পরিবার’ গণ্য করা যেতে পারে। তবে প্রকৃত ঘটনা যেটাই হৌক না কেন, কেবলমাত্র নবীর অবাধ্যতা করলেই আল্লাহর গজব আসাটা অবশ্যম্ভাবী। তার উপরে কেউ ঈমান আনুক বা না আনুক। হাদীছে এসেছে, ‘ক্বিয়ামতের দিন অনেক নবীর একজন উম্মতও থাকবে না’।[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৯৬] এখানে লক্ষণীয় যে, নবীপত্নী হয়েও লূতের স্ত্রী গজব থেকে রেহাই পাননি। আল্লাহ নূহ পত্নী ও লূত পত্নীকে ক্বিয়ামতের দিন বলবেন- وَقِيلَ ادْخُلاَ النَّارَ مَعَ الدَّاخِلِينَ، ‘যাও জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে চলে যাও’ (তাহরীম ৬৬/১০)।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন