মুতার যুদ্ধ
৮ম হিজরীর জুমাদাল ঊলা (আগষ্ট অথবা সেপ্টেম্বর ৬২৯ খৃ.)
ওমরাতুল ক্বাযা থেকে ফিরে এসে যিলহাজ্জ মাসের শেষ দিনগুলিসহ পরবর্তী চার মাস রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মদীনায় অবস্থান করেন। অতঃপর মদীনার নিরাপত্তা বিধান ও শাম অঞ্চলে মুসলমানদের উপর খ্রিষ্টান শাসকদের অব্যাহত অত্যাচার দমনের উদ্দেশ্যে জুমাদাল ঊলা মাসে এই অভিযান প্রেরণ করেন। এটিই ছিল খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম যুদ্ধাভিযান (সীরাহ সহীহাহ ২/৪৭০)। এ যুদ্ধের কারণ হিসাবে ওয়াক্বেদী যা বর্ণনা করেছেন, তা বিদ্বানগণের নিকট গ্রহণযোগ্য না হলেও এটা নিশ্চিত যে, إن الله إذا أراد شيئا هيأ له الأسباب ‘আল্লাহ যখন কোন কিছু করার ইচ্ছা করেন, তখন তার জন্য কারণসমূহ সৃষ্টি করে দেন’। অতএব বাহ্যিক ও প্রত্যক্ষ কারণ নিশ্চয়ই কিছু ছিল। যার জন্য যুদ্ধ যাত্রা অপরিহার্য হয়েছিল। তবে এটা নিশ্চিত ধারণা করা যায় যে, মদীনাকে ইহূদীমুক্ত করার পর এবং হোদায়বিয়াতে প্রধান প্রতিপক্ষ কুরায়েশদের সঙ্গে সন্ধিচুক্তি হওয়ার পর তৃতীয় প্রতিপক্ষ খ্রিষ্টান রোমক শক্তিকে পদানত করা ও ইসলামী বিজয়ের পথ সুগম করা মুতা যুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে। এর মাধ্যমে আল্লাহ চেয়েছিলেন শাম ও পারস্যে রাজত্বকারী রোমক ও পারসিক দুই পরাশক্তির বিরুদ্ধে ইসলামের বিজয়াভিযান শুরু করতে। যা উমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে সুসম্পন্ন হয়।
যায়েদ বিন হারেছাহর নেতৃত্বে ৩০০০ সৈন্যের অত্র বাহিনী প্রেরিত হয়। পক্ষান্তরে বিরোধী বুছরার রোমক গবর্ণর শুরাহবীল বিন ‘আমর আল-গাসসানীর ছিল প্রায় ২ লাখ খ্রিষ্টান সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী (ইবনু হিশাম ২/৩৭৫)। বায়তুল মুক্বাদ্দাসের নিকটবর্তী মু’তা (مُؤْتَة) নামক স্থানে সংঘটিত এই যুদ্ধে সেনাপতি যায়েদ বিন হারেছাহ, অতঃপর জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব, অতঃপর আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা পরপর তিনজন সেনাপতি শহীদ হলে সকলের পরামর্শে খালেদ বিন অলীদ সেনাপতি হন। অতঃপর তাঁর হাতে বিজয় অর্জিত হয়। বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরূপ।-
এই বাহিনীর সেনাপতি হিসাবে যায়েদ বিন হারেছাহকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এসময় রাসূল (সাঃ) বলেন, যদি যায়েদ নিহত হয়, তবে তার স্থলে জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব সেনাপতি হবে। যদি সে নিহত হয়, তাহলে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা সেনাপতি হবে (বুখারী হা/৪২৬১)। বস্ত্ততঃ এই ধরনের সাবধানতা ছিল এটাই প্রথম (সীরাহ সহীহাহ ২/৪৬৭)।
মুসলিম বাহিনী শামের মা‘আন (مَعَانُ) অঞ্চলে অবতরণ করে। অতঃপর তারা হঠাৎ জানতে পারেন যে, রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াস এসময় এক লাখ সৈন্য নিয়ে শামের বালক্বা অঞ্চলের মাআবে (مَآبُ) অবস্থান করছেন। সেখানে তার সাথে যোগ হয়েছে লাখাম, জুযাম, ক্বাইন (الْقَيْنُ), বাহরা ও বালী প্রভৃতি আরব-খ্রিষ্টান গোত্র সমূহের আরো এক লাখ যোদ্ধা।
অভাবিতভাবে বিরোধী পক্ষের বিশাল সৈন্য সমাবেশ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে তাঁরা দুশ্চিন্তায় পড়েন। অতঃপর পরামর্শ সভায় বসেন। এটি ছিল বদর যুদ্ধের মত। যেখানে পূর্ব থেকে কেউ জানতেন না যে, তারা এত বড় একটি সিদ্ধান্তকারী যুদ্ধের সম্মুখীন হবেন। সভায় কেউ মত প্রকাশ করেন যে, আমরা রাসূল (সাঃ)-এর নিকটে শত্রু সংখ্যার খবর দিয়ে পত্র লিখি। অতঃপর তিনি আমাদের জন্য সাহায্যকারী বাহিনী পাঠাবেন অথবা আমাদেরকে যা নির্দেশ দিবেন, তাই করব। তখন আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা ওজস্বিনী ভাষায় সকলের উদ্দেশ্যে বলেন,
يَا قَوْمِ، وَاللهِ إنَّ الَّتِي تَكْرَهُونَ لَلَّتِي خَرَجْتُمْ تَطْلُبُونَ، الشَّهَادَةُ- وَمَا نُقَاتِلُ النَّاسَ بِعَدَدِ وَلاَ قُوَّةٍ وَلاَ كَثْرَةٍ، مَا نُقَاتِلُهُمْ إلاَّ بِهَذَا الدِّينِ الَّذِي أَكْرَمَنَا اللهُ بِهِ، فَانْطَلِقُوا فَإِنَّمَا هِيَ إحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ إمَّا ظُهُورٌ وَإِمَّا شَهَادَةٌ. قَالَ: فَقَالَ النَّاسُ: قَدْ وَاللهِ صَدَقَ ابْنُ رَوَاحَةَ-
‘হে আমার কওম! আল্লাহর কসম! তোমরা যেটাকে অপসন্দ কর, নিশ্চয় তোমরা সেটা অন্বেষণের জন্যই বের হয়েছ। আর তা হল ‘শাহাদাত’। আমরা মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করিনা সংখ্যা দ্বারা, শক্তি দ্বারা বা আধিক্য দ্বারা। আর আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করিনা কেবলমাত্র এই দ্বীনের স্বার্থ ব্যতীত। যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। অতএব সামনে বাড়ুন। নিশ্চয় এর মধ্যে কেবলমাত্র দু’টি কল্যাণের একটি রয়েছে। হয় বিজয় নয় শাহাদাত। অতঃপর সকলে বললেন,قَدْ وَاللهِ صَدَقَ ابْنُ رَوَاحَةَ অবশ্যই, আল্লাহর কসম! ইবনু রাওয়াহা সত্য বলেছেন’। এরপর তিনি সকলের উদ্দেশ্যে ৮ লাইনের একটি স্বতঃস্ফূর্ত কবিতা পাঠ করেন’।[1]
অতঃপর সকলে নতুন উদ্দীপনায় স্রেফ আল্লাহর উপর ভরসা করে যুদ্ধের প্রস্তুততি শুরু করেন এবং দু’দিন পর যুদ্ধে রওয়ানা হন ও মুতা (مُؤْتَةُ) নামক স্থানে খ্রিষ্টান বাহিনীর মুখোমুখি হন। অতঃপর তুমুল যুদ্ধের এক পর্যায়ে সেনাপতি যায়েদ বিন হারেছাহ বর্শার আঘাতে শহীদ হন। অতঃপর জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব যুদ্ধের ঝান্ডা তুলে নেন। এসময় তাঁর ঘোড়া শাক্বরা (شَقْرَاءُ) নিহত হয়। অতঃপর মাটিতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধাবস্থায় তাঁর ডান হাত কর্তিত হয়। তখন তিনি বাম হাতে ঝান্ডা আঁকড়ে ধরেন। এরপর বাম হাত কর্তিত হয়। তখন বগলে ঝান্ডা চেপে ধরেন। অতঃপর তিনি শহীদ হন। তাঁর পরে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা পতাকা তুলে ধরেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনিও শহীদ হয়ে যান।[2] তখন সকলের পরামর্শক্রমে খালেদ বিন অলীদ সেনাপতি হন।[3] অতঃপর তাঁর হাতেই বিজয় অর্জিত হয়। মুসলিম বাহিনীর সীসাঢালা ঐক্য, অপূর্ব বীরত্ব, অভূতপূর্ব শৌর্য-বীর্য, নিখাদ শাহাদাতপ্রিয়তা, খালেদের অতুলনীয় যুদ্ধ নৈপুণ্য এবং সর্বোপরি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে অত্যন্ত অল্প ক্ষতির বিনিময়ে বিশাল বিজয় সাধিত হয়। ফালিল্লাহিল হাম্দ।
এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর মাত্র ১২ জন শহীদ হন’ (ইবনু হিশাম ২/৩৮৮-৮৯)। রোমক বাহিনীর হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানা না গেলেও একা খালেদ বিন অলীদের যেখানে নয় খানা তরবারি ভেঙ্গেছিল’ (বুখারী হা/৪২৬৫), তাতে অনুমান করা চলে কত সৈন্য তাদের ক্ষয় হয়েছিল। বলা বাহুল্য, এটাই ছিল ‘খন্দক’ যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধ।
মু‘জিযা :
━━━━━━
এ যুদ্ধে রাসূল (সাঃ) থেকে মু‘জেযা প্রকাশিত হয়। যেমন মদীনায় খবর পৌছার পূর্বেই তিনি সকলকে সেনাপতিদের পরপর শাহাদাতের খবর দেন এবং অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন,حَتَّى أَخَذَ الرَّايَةَ سَيْفٌ مِنْ سُيُوفِ اللهِ حَتَّى فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِمْ ‘অবশেষে ঝান্ডা হাতে নিয়েছে ‘আল্লাহর তরবারি সমূহের অন্যতম তরবারি’। অতঃপর আল্লাহ তাদের হাতে বিজয় দান করেছেন’ (বুখারী হা/৪২৬২)।[4]
মুতার শহীদদের মর্যাদা :
━━━━━━━━━━━━━━
(১) মদীনায় অশ্রুসজল নেত্রে শহীদগণের খবর দেওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,مَا يَسُرُّهُمْ أَنَّهُمْ عِنْدَنَا ‘তাদেরকে এ বিষয়টি খুশী করবে না যে, তারা আমাদের কাছে থাকুক’ (বুখারী হা/২৭৯৮)। অর্থাৎ তারা জান্নাতে অবস্থান করাতেই খুশী হয়ে গেছে। দুনিয়াতে তারা থাকতে চায় না’ (ফাৎহুল বারী হা/২৭৯৮-এর ব্যাখ্যা)।
(২) আব্দুল্লাহ বিন আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব জিব্রীল ও মীকাঈল-এর সাথে দু’টি ডানাসহ অতিক্রম করার সময় আমাকে সালাম করল। অতঃপর যুদ্ধে তার দু’হাত হারানোর ঘটনা বর্ণনা করল। এ কারণে জান্নাতে সে জা‘ফর আত-ত্বাইয়ার(جَعْفَرٌ الطَّيَّارُ) ‘উড়ন্ত জা‘ফর’ নামে অভিহিত হয়েছে’।[ত্বাবারাণী আওসাত্ব হা/৬৯৩৬; সহীহ আত-তারগীব হা/১৩৬২] তিনি বলেন, আমি জা‘ফরকে জান্নাতে ফেরেশতাদের সাথে দুই ডানায় উড়তে দেখেছি’ (সহীহাহ হা/১২২৬)। এজন্য তাঁকে ‘যুল-জানাহাইন’(ذُوالْجَناحَين) বা ‘দুই ডানা ওয়ালা’ বলা হয়ে থাকে (মির‘আত শরহ মিশকাত হা/১৭৪৩-এর ব্যাখ্যা)।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জা‘ফর বিন আবু ত্বালিবের সন্তানদের ডেকে এনে সান্ত্বনা দিয়ে তাদের মায়ের উদ্দেশ্যে বলেন,أَنَا وَلِيُّهُمْ فِى الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ ‘দুনিয়া ও আখেরাতে আমিই ওদের অভিভাবক’ (আহমাদ হা/১৭৫০, সনদ সহীহ)।
মুতার যুদ্ধের গুরুত্ব :
━━━━━━━━━━━━
(১) তৎকালীন বিশ্বের সেরা পরাশক্তির বিরুদ্ধে স্বল্পসংখ্যক মুসলিম বাহিনীর এই বীরত্বপূর্ণ মুকাবিলায় খ্রিষ্টান বিশ্ব যেমন ভয়ে চুপসে যায়, আরব বিশ্ব তেমনি হতচকিত হয়ে পড়ে। মাথা উঁচু করার স্বপ্ন ভুলে গিয়ে চির বৈরী বনু গাত্বফান, বনু সুলায়েম, বনু আশজা‘, বনু যুবিয়ান, বনু ফাযারাহ প্রভৃতি গোত্রগুলি ইসলাম কবুল করে। অন্যদিকে রোম সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আরব অঞ্চলে ও দূরবর্তী অঞ্চল সমূহে মুসলিম বিজয়ের সূচনা হয়।
(২) এই যুদ্ধের ফলে অমুসলিম শক্তি নিশ্চিত হয় যে, ঈমানী বলে বলিয়ান মুসলিম বাহিনী আল্লাহর গায়েবী মদদে পুষ্ট এবং এদের মহান নেতা মুহাম্মাদ নিঃসন্দেহে সত্য নবী।
(৩) এই যুদ্ধে বিজয় মুসলমানদের জন্য ভবিষ্যৎ বিশ্ব জয়ের সিংহ দুয়ার উন্মুক্ত করে দেয়।
[1]. ইবনু হিশাম ২/৩৭৫; আর-রাহীক্ব ৩৮৯ পৃঃ; সীরাহ সহীহাহ ২/৪৬৮। বর্ণনাটির সনদ ‘মুরসাল’। তবে উরওয়া বিন যুবায়ের (রাঃ) পর্যন্ত বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত’ (তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক ১৬২৬)।
[2]. এখানে প্রসিদ্ধ আছে যে, রাসূল (সাঃ) যখন মুতা যুদ্ধের সেনাপতিদের শাহাদতের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা সম্পর্কে বলতে গিয়ে চুপ হয়ে যান। এতে আনছারদের চেহারা পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং তারা আব্দুল্লাহ সম্পর্কে মন্দ কিছু ধারণা করতে থাকেন। অতঃপর রাসূল (সাঃ) বলেন, তাদের সবাইকে আমার নিকটে স্বর্ণের খাটের উপর উঁচু করে জান্নাতে দেখানো হয়েছে। যেভাবে স্বপ্নযোগে মানুষ দেখে থাকে। আমি দেখলাম যে, সাথী দু’জনের খাটের চাইতে আব্দুল্লাহর খাটটি একটু বাঁকাচোরা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিজন্য? তখন বলা হল যে, ঐ দু’জন জিহাদে চলে গেল, কিন্তু আব্দুল্লাহ কিছুটা ইতস্ততঃ করেছিল। অতঃপর গিয়েছিল’ (ইবনু হিশাম ২/৩৮০; আর-রাউযুল উনুফ ৪/১২৬; আল-বিদায়াহ ৪/২৪৫)। বর্ণনাটির সনদ মুনক্বাতি‘ বা ছিন্নসূত্র (তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক ১৬৩৩; মা শা-‘আ ১৮৪-৮৫ পৃঃ)।
[3]. প্রসিদ্ধ আছে যে, পরপর তিন জন সেনাপতি শহীদ হওয়ার পর বনু ‘আজলানের সাবেত বিন আরক্বাম এগিয়ে এসে ঝান্ডা উত্তোলন করেন এবং সবাইকে ডেকে বলেন, হে মুসলমানেরা! তোমরা একজন ব্যক্তির উপরে ঐক্যবদ্ধ হও। লোকেরা বলল, তুমি হও। তিনি বললেন, আমি এ কাজের যোগ্য নই। তখন সকলে খালেদ বিন অলীদের ব্যাপারে একমত হল। অতঃপর তিনি ঝান্ডা হাতে নিলেন এবং তীব্র বেগে যুদ্ধ শুরু করলেন’ (আর-রাহীক্ব ৩৯০-৯১ পৃঃ)। ঘটনাটি বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়। বরং যঈফ (আর-রাহীক্ব, তা‘লীক্ব ১৬৮ পৃঃ)।
[4]. প্রসিদ্ধ আছে যে, মুতার যুদ্ধ থেকে ফেরার সময় মদীনার নিকটবর্তী হলে রাসূল (সাঃ) ও মুসলমানগণ তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য এগিয়ে যান। এমতাবস্থায় লোকেরা সেনাবাহিনীর দিকে মাটি ছুঁড়ে মারতে থাকে এবং বলতে থাকে يَا فُرَّارُ، فَرَرْتُمْ فِي سَبِيلِ اللهِ؟ ‘হে পলাতক দল! তোমরা আল্লাহর রাস্তা থেকে পালিয়ে এসেছ? তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, لَيْسُوا بِالْفُرَّارِ، وَلَكِنَّهُمْ الْكُرَّارُ إنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى ‘ওরা পলায়নকারী নয় বরং ওরা হামলাকারী হবে ইনশাআল্লাহ’ (ইবনু হিশাম ২/৩৮২; সীরাহ সহীহাহ ২/৪৬৯)। বর্ণনাটি ‘মুরসাল’ (তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক ১৬৩৮; মা শা-‘আ ১৮৩ পৃঃ)। বরং এটাই সত্য যে, মুতার যুদ্ধে শেষের দিকে খালেদ বিন অলীদ-এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক বিজয় লাভ হয়। অতএব রাসূল (সাঃ) যদি তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য এগিয়ে যেয়ে থাকেন, তবে সেটি হবে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন