বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫

হোদায়বিয়ার সন্ধি

 

হোদায়বিয়ার সন্ধি

(৬ষ্ঠ হিজরীর যুলক্বা‘দাহ মাস)
হোদায়বিয়ার সন্ধিকে ‘গাযওয়া’ বা যুদ্ধ(غزوة الحديبية) বলা হয় এ কারণে যে, কুরায়েশরা রাসূল (সাঃ)-কে এখানে উমরার জন্য মক্কায় প্রবেশে বাধা দিয়েছিল’ (সীরাহ সহীহাহ ২/৪৩৪)। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ১লা যুলক্বা‘দাহ সোমবার স্ত্রী উম্মে সালামাহ সহ ১৪০০ (মতান্তরে ১৫০০) সাথী নিয়ে উমরাহর উদ্দেশ্যে মদীনা হতে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হন। এই সময় কোষবদ্ধ তরবারি ব্যতীত তাদের সাথে অন্য কোন অস্ত্র ছিল না। কিন্তু মক্কার অদূরে হোদায়বিয়া নামক স্থানে পৌঁছলে তাঁরা কুরায়েশ নেতাদের বাধার সম্মুখীন হন। অবশেষে তাদের সঙ্গে দশ বছরের জন্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ফলে চুক্তির শর্তানুযায়ী তিনি মদীনায় ফিরে আসেন এবং পরের বছর উমরা করেন। বিস্তারিত নিম্নরূপ।-
‘হোদায়বিয়া’ (الْحُدَيْبِيَة) একটি কূয়ার নাম। যা মক্কা থেকে উত্তর-পশ্চিমে ২২ কি.মি. দূরে অবস্থিত। এটি বর্তমানে ‘শুমাইসী’ (الشُمَيْسِى) নামে পরিচিত। এখানে হোদায়বিয়ার বাগিচাসমূহ এবং ‘রিযওয়ান মসজিদ’(مسجد الرِضْوَان) অবস্থিত।
খন্দকের যুদ্ধে ভূমিধস বিজয়ের পরেও কুরায়েশদের শত্রুতা থেকে রাসূল (সাঃ) নিশ্চিন্ত ছিলেন না। সেকারণ অধিক সংখ্যক সাহাবী নিয়ে তিনি উমরায় এসেছিলেন এবং সাথে অস্ত্রও ছিল। ফলে যুদ্ধ হবে মনে করে দুর্বলচেতা ও বেদুঈন মুসলমানরা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সরে পড়ে। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,
سَيَقُولُ لَكَ الْمُخَلَّفُونَ مِنَ الْأَعْرَابِ شَغَلَتْنَا أَمْوَالُنَا وَأَهْلُونَا فَاسْتَغْفِرْ لَنَا يَقُولُونَ بِأَلْسِنَتِهِمْ مَا لَيْسَ فِي قُلُوبِهِمْ قُلْ فَمَنْ يَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا إِنْ أَرَادَ بِكُمْ ضَرًّا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ نَفْعًا بَلْ كَانَ اللهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا- بَلْ ظَنَنْتُمْ أَنْ لَنْ يَنْقَلِبَ الرَّسُولُ وَالْمُؤْمِنُونَ إِلَى أَهْلِيهِمْ أَبَدًا وَزُيِّنَ ذَلِكَ فِي قُلُوبِكُمْ وَظَنَنْتُمْ ظَنَّ السَّوْءِ وَكُنْتُمْ قَوْمًا بُورًا- (الفتح 11-12)-

‘পিছনে পড়ে থাকা বেদুঈনরা সত্বর তোমাকে বলবে, আমাদের মাল-সম্পদ ও পরিবার আমাদেরকে ব্যস্ত রেখেছিল। অতএব আপনি আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তারা মুখে একথা বলবে, যা তাদের অন্তরে নেই। বল, আল্লাহ তোমাদের কোন ক্ষতি বা উপকার করতে চাইলে কে তাকে বিরত রাখতে পারে? বরং তোমরা যা কিছু কর সবই আল্লাহ খবর রাখেন’। ‘বরং তোমরা ধারণা করেছিলে যে, রাসূল ও মুমিনগণ তাদের পরিবারের কাছে আর কখনই ফিরে আসতে পারবে না এবং এই ধারণা তোমাদের অন্তরগুলিকে সুশোভিত করে রেখেছিল। আর তোমরা মন্দ ধারণা করেছিলে। বস্ত্ততঃ তোমরা ছিলে ধ্বংসমুখী এক সম্প্রদায়’ (ফাৎহ ৪৮/১১-১২)। এখানে বেদুঈন (الْأَعْرَابُ) বলতে মদীনার জুহাইনা ও মুযাইনা গোত্র দ্বয়কে বুঝানো হয়েছে (তাফসীর ত্বাবারী)।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে এক রাতে স্বপ্ন দেখানো হল যে, তিনি স্বীয় সাহাবীদের সাথে নিয়ে মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করছেন এবং উমরাহ করছেন। যেমন আল্লাহ বলেন,لَقَدْ صَدَقَ اللهُ رَسُولَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِنْ شَاءَ اللهُ آمِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لاَ تَخَافُونَ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا فَجَعَلَ مِنْ دُونِ ذَلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا ‘আল্লাহ তাঁর রাসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আল্লাহ চাহেন তো তোমরা অবশ্যই মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে মস্তক মুন্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়। এমনভাবে যে, তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন, যা তোমরা জানো না। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে একটি নিকটবর্তী বিজয় দান করবেন’ (ফাৎহ ৪৮/২৭)। অর্থাৎ তোমাদেরকে মক্কায় প্রবেশ না করিয়ে হোদায়বিয়া থেকে ফেরৎ আনার মধ্যে তোমাদের জন্য কি কল্যাণ নিহিত থাকবে, তা তোমরা জানো না। অতঃপর সেই প্রত্যাবর্তনের বিনিময়ে তোমাদেরকে তিনি দান করবেন একটি ‘নিকটবর্তী বিজয়’। অর্থাৎ হোদায়বিয়ার সন্ধি। অতঃপর সেখান থেকে ফিরেই হবে খায়বর বিজয় ও বিপুল গণীমত লাভ।
এ স্বপ্ন দেখার পরে তিনি উমরাহ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সাহাবীদের প্রস্তুত হতে বলেন। ইতিপূর্বে খন্দক যুদ্ধে বিজয় লাভের পর সমগ্র আরবে মুসলিম শক্তিকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসাবে গণ্য করা হতে থাকে। তাই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কিছুটা স্বস্তির মধ্যে ছিলেন।


উমরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা :
━━━━━━━━━━━━━━━━
৬ষ্ঠ হিজরীর ১লা যুলক্বা‘দাহ সোমবার তিনি ১৪০০ (মতান্তরে ১৫০০) সাথী নিয়ে মদীনা হতে রওয়ানা হন (বুখারী হা/৪১৫৩)। লটারিতে এবার তাঁর সফরসঙ্গী হন উম্মুল মুমেনীন হযরত উম্মে সালামাহ (রাঃ)। উমরাহর সফরে নিয়মানুযায়ী কোষবদ্ধ তরবারি এবং মুসাফিরের হালকা অস্ত্র ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র তাঁদের নিকটে রইল না। অতঃপর মদীনা থেকে অনতিদূরে যুল-হুলায়ফা পৌঁছে তাঁরা উমরাহর ইহরাম বাঁধেন। অতঃপর ৭০টি উটের গলায় হার পরালেন এবং উটের পিঠের কুঁজের উপরে সামান্য কেটে রক্তপাত করে কুরবানীর জন্য চিহ্নিত করলেন। আবু ক্বাতাদাহ আনছারী (রাঃ)-সহ অনেক সাহাবী মুহরিম ছিলেন না। মুসলমানদের মিত্র বনু খোযা‘আ গোত্রের বিশর বিন সুফিয়ান আল-কা‘বী(بِشْرُ بْنُ سُفْيَانَ الْكَعْبِيُّ) কে গোয়েন্দা হিসাবে রাসূল (সাঃ) আগেই মক্কায় পাঠিয়েছিলেন কুরায়েশদের গতিবিধি জানার জন্য। অতঃপর রাসূল (সাঃ) মক্কা থেকে ৮০ কি. মি. দূরে ‘ওসফান’ (عُسفان) পৌঁছলে উক্ত গোয়েন্দা এসে রাসূল (সাঃ)-কে খবর দেন যে, কুরায়েশরা উমরাহতে বাধা দেওয়ার জন্য যুদ্ধের প্রস্তুততি নিয়েছে। এজন্য তারা তাদের মিত্র বেদুঈন গোত্র সমূহকে সংঘবদ্ধ করেছে। তারা আপনার সফরের কথা শুনেছে এবং যুদ্ধ সাজে সজ্জিত অবস্থায় যু-তুওয়া(ذو طُوَي)তে পৌঁছে গেছে। তারা আল্লাহর নামে কসম করেছে যে, আপনি কখনোই মক্কায় প্রবেশ করতে পারবেন না। অন্যদিকে খালেদ বিন অলীদ তার অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে মক্কা থেকে ৬৪ কি. মি. দূরে কুরাউল গামীমে পৌঁছে গেছে। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন,
يَا وَيْحَ قُرَيْشٍ لَقَدْ أَكَلَتْهُمُ الْحَرْبُ مَاذَا عَلَيْهِمْ لَوْ خَلَّوْا بَيْنِى وَبَيْنَ سَائِرِ النَّاسِ فَإِنْ أَصَابُونِى كَانَ الَّذِى أَرَادُوا وَإِنْ أَظْهَرَنِى اللهُ عَلَيْهِمْ دَخَلُوا فِى الإِسْلاَمِ وَهُمْ وَافِرُونَ وَإِنْ لَمْ يَفْعَلُوا قَاتَلُوا وَبِهِمْ قُوَّةٌ فَمَاذَا تَظُنُّ قُرَيْشٌ وَاللهِ لاَ أَزَالُ أُجَاهِدُهُمْ عَلَى الَّذِى بَعَثَنِى اللهُ لَهُ حَتَّى يُظْهِرَهُ اللهُ أَوْ تَنْفَرِدَ هَذِهِ السَّالِفَةُ- رواه احمد-
‘হায় দুর্ভোগ কুরায়েশদের জন্য! যুদ্ধ তাদের খেয়ে ফেলেছে। যদি তারা আমার ও অন্যদের মধ্য থেকে সরে দাঁড়াত, তাহলে তাদের কি সমস্যা ছিল? যদি তারা আমার ক্ষতি সাধন করতে পারে, তবে সেটি তাদের আশানুরূপ হবে। আর যদি আল্লাহ আমাকে তাদের উপর বিজয়ী করেন, তাহলে তারা ইসলামে প্রবেশ করবে পুরোপুরি লাভবান অবস্থায়। আর যদি ইসলাম কবুল না করে, তাহলে তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যতক্ষণ তাদের শক্তি থাকবে। সুতরাং কুরায়েশরা কী ধারণা করে? আল্লাহর কসম! আমি তাদের বিরুদ্ধে সেই দ্বীনের উপর যুদ্ধ চালিয়ে যাব, যার জন্য আল্লাহ আমাকে পাঠিয়েছেন। যতক্ষণ না আল্লাহ তাকে বিজয়ী করেন অথবা এই ক্ষুদ্র দল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়’।[আহমাদ হা/১৮৯৩০; আলবানী, ফিক্বহুস সীরাহ ৩১৮ পৃঃ] রাসূল (সাঃ)-এর উক্ত বক্তব্যে তাঁর শান্তিবাদী নীতি ফুটে উঠে।


পরামর্শ বৈঠক :
━━━━━━━━━
উক্ত গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ বৈঠকে বসলেন এবং বললেন,أَشِيرُوا أَيُّهَا النَّاسُ عَلَىَّ ‘হে লোকেরা! তোমরা আমাকে পরামর্শ দাও!’ অতঃপর তিনি তাদের নিকট দু’টি বিষয়ে মতামত চাইলেন। এক- কুরাইশের সাহায্যকারী গোত্রগুলির উপরে হামলা চালিয়ে তাদেরকে পরাভূত করা। অথবা দুই- আমরা উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে যাত্রা অব্যাহত রাখব এবং পথে কেউ বাধা দিলে মুকাবিলা করব। আবুবকর (রাঃ) শেষোক্ত প্রস্তাবের পক্ষে মত প্রকাশ করলেন। অতঃপর তিনি বললেন,امْضُوا عَلَى اسْمِ اللهِ ‘তোমরা আল্লাহর নামে যাত্রা কর’ (বুখারী হা/৪১৭৮-৭৯)। অতঃপর মক্কা অভিমুখে যাত্রা শুরু হল।


খালেদের অপকৌশল :
━━━━━━━━━━━━━
কিছুদূর অগ্রসর হতেই জানা গেল যে, মক্কার মহা সড়কে ‘কোরাউল গামীম’(كُرَاعُ الْغَمِيمِ) নামক স্থানে খালেদ বিন অলীদ ২০০ অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে প্রস্তুত হয়ে আছেন মুসলিম কাফেলার উপরে হামলা করার জন্য। যেখান থেকে উভয় দল পরস্পরকে দেখতে পাচ্ছিল। দূর থেকে মুসলমানদের যোহরের সালাত আদায়ের দৃশ্য অবলোকন করে তারা উপলব্ধি করে যে, মুসলমানেরা সালাত আদায় কালে দুনিয়া ভুলে যায় ও আখেরাতের চিন্তায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে। তারা ভাবল, এই সুযোগে মুসলিম কাফেলার উপরে হামলা চালিয়ে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। আল্লাহ পাক তাদের এ চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেবার জন্য তাঁর রাসূল-এর উপর এ সময় ছালাতুল খাওফের বিধান নাযিল করলেন (নিসা ৪/১০১-১০২)। ফলে আছরের সালাতের সময় একদল যখন সালাত আদায় করলেন, অপরদল তখন সতর্ক পাহারায় রইলেন (আবুদাঊদ হা/১২৩৬, সনদ সহীহ)। এতে খালেদের পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে গেল।


হোদায়বিয়ায় অবতরণ ও পানির সংকট :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
মিসওয়ার বিন মাখরামাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) যুদ্ধ এড়ানোর জন্য মহাসড়ক ছেড়ে ডান দিকে পাহাড়ী পথ ধরে অগ্রসর হতে থাকেন এবং মক্কার নিম্নাঞ্চলে হোদায়বিয়ার শেষ প্রান্তে একটি ঝর্ণার নিকটে গিয়ে অবতরণ করেন। ঐ সময় রাসূল (সাঃ)-এর উষ্ট্রী ‘ক্বাছওয়া’ বসে পড়ে। লোকেরা বলল, ক্বাছওয়া নাখোশ হয়েছে(خَلَأَتِ الْقَصْوَاءُ)। উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন,مَا خَلَأَتِ الْقَصْوَاءُ وَمَا ذَاكَ لَهَا بِخُلُقٍ وَلَكِنْ حَبَسَهَا حَابِسُ الْفِيلِ ‘ক্বাছওয়া নাখোশ হয়নি, আর এটা তার চরিত্রে নেই। কিন্তু তাকে আটকে দিয়েছেন সেই সত্তা যিনি (আবরাহার) হস্তীকে (কা‘বায় হামলা করা থেকে) আটকিয়েছিলেন’। তৃষ্ণার্ত সাথীদের পানির সমস্যা সমাধানে উক্ত ঝর্ণা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যর্থ হয়ে গেল। ফলে সবাই রাসূল (সাঃ)-এর নিকটে পানির আবেদন করল। তখন তিনি নিজের শরাধার থেকে একটি তীর বের করে তাদের হাতে দিলেন এবং সেটাকে ঝর্ণায় নিক্ষেপ করার জন্য বললেন। ‘অতঃপর আল্লাহর কসম! ঝর্ণায় অতক্ষণ পর্যন্ত পানি জোশ মারতে থাকল, যতক্ষণ না তারা পরিতৃপ্ত হলেন এবং সেখান থেকে (মদীনায়) ফিরে গেলেন’।[বুখারী হা/২৭৩২; মিশকাত হা/৪০৪২] জাবের ও বারা বিন আযেব (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি একটি পানির পাত্র চাইলেন। অতঃপর তা থেকে ওযূ করলেন। অতঃপর অবশিষ্ট পানি কূয়ায় ফেলতে বললেন। অতঃপর সেখান থেকে ঝর্ণাধারার ন্যায় পানি প্রবাহিত হতে থাকল’।[বুখারী হা/৩৫৭৬, ৪১৫০; মিশকাত হা/৫৮৮২-৮৩] বস্ত্ততঃ এটি ছিল রাসূল (সাঃ)-এর অন্যতম মু‘জেযা।


মধ্যস্থতা বৈঠক :
━━━━━━━━━━
হোদায়বিয়ায় অবতরণের কিছু পরে মুসলমানদের মিত্র বনু খোযা‘আহর নেতা বুদাইল বিন অরক্বা(بُدَيلُ بنُ وَرْقَاءَ) কিছু লোক সহ উপস্থিত হলেন। তিনি এসে খবর দিলেন যে, কুরায়েশ নেতা কা‘ব ও ‘আমের বিন লুওয়াই সৈন্য-সামন্ত এমনকি নারী-শিশু নিয়ে হোদায়বিয়ার পর্যাপ্ত পানিপূর্ণ ঝর্ণার ধারে শিবির স্থাপন করেছে, আপনাদের বাধা দেওয়ার জন্য ও প্রয়োজনে যুদ্ধ করার জন্য। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, তুমি তাদেরকে গিয়ে বল যে,إِنَّا لَمْ نَجِئْ لِقِتَالِ أَحَدٍ، وَلَكِنَّا جِئْنَا مُعْتَمِرِينَ ‘আমরা কারু সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসিনি। বরং আমরা এসেছি কেবল উমরাহ করার জন্য’। তিনি বললেন, কুরায়েশরা ইতিপূর্বে যুদ্ধ করেছে এবং তারা পর্যুদস্ত হয়েছে। তারা চাইলে আমি তাদের জন্য একটা সময় বেঁধে দেব, সে সময়ে তারা সরে দাঁড়াবে (এবং আমরা উমরাহ করে নেব)। এরপরেও তারা যদি না মানে এবং কেবল যুদ্ধই তাদের কাম্য হয়, তাহলে যার হাতে আমার জীবন তার কসম করে বলছি, আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে এই দ্বীনের জন্য যুদ্ধ করব যতক্ষণ না আমার আত্মা বিচ্ছিন্ন হয় অথবা আল্লাহ স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে একটা ফায়ছালা করে দেন’।
অতঃপর বুদাইল কুরায়েশ নেতাদের কাছে গেলেন। তরুণরা তার কোন কথা শুনতে চাইল না। জ্ঞানীরা শুনতে চাইলেন। তখন তিনি রাসূল (সাঃ)-এর বক্তব্য যথাযথভাবে বিবৃত করলেন।
ফলে সেখানে উপস্থিত উরওয়া বিন মাসঊদ ছাক্বাফী বলে উঠলেন, আমাকে একবার তার কাছে যেতে দাও’। অতঃপর নেতাদের অনুমতি নিয়ে তিনি রাসূল (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে সেসব কথাই বললেন, যা তিনি ইতিপূর্বে বুদাইলকে বলেছিলেন। জবাবে উরওয়া বললেন, ‘হে মুহাম্মাদ! যদি তুমি নিজ সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করে দাও, তবে ইতিপূর্বে কোন আরব এরূপ করেনি। আর যদি বিপরীতটা হয়, (অর্থাৎ তুমি পরাজিত হও) তবে আল্লাহর কসম! তোমার পাশে এমন কিছু নিকৃষ্ট লোককে দেখছি, যারা তোমার থেকে পালিয়ে যাবে অথবা ছেড়ে যাবে’। তার এ মন্তব্য শুনে ঠান্ডা মেযাজের মানুষ আবুবকর (রাঃ) রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলে উঠলেন,امْصُصْ بَظْرَ اللاَّتِ، أَنَحْنُ نَفِرُّ عَنْهُ وَنَدَعُهُ؟ ‘লাতের গুপ্তাঙ্গের ঝুলন্ত চর্ম চুষতে থাক! আমরা রাসূলকে রেখে পালিয়ে যাব ও তাঁকে ছেড়ে যাব’?
এরপর উরওয়া রাসূল (সাঃ)-এর সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে থাকেন। কথার ফাঁকে ফাঁকে তিনি বারবার রাসূল (সাঃ)-এর দাড়িতে হাত দিচ্ছিলেন। ওদিকে পাশে দাঁড়ানো মুগীরা বিন শো‘বা (রাঃ) নিজ তরবারির বাঁটে হাত দিচ্ছিলেন ও উরওয়াকে ধমক দিয়ে বলছিলেন,أَخِّرْ يَدَكَ عَنْ لِحْيَةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘তোমার হাতকে রাসূল (সাঃ)-এর দাড়ি থেকে দূরে রাখ’। এভাবে উরওয়া রাসূল (সাঃ)-এর প্রতি সাহাবীগণের ভালাবাসার নমুনা সমূহ প্রত্যক্ষ করলেন। উল্লেখ্য যে, মুগীরা ছিলেন উরওয়ার ভাতিজা।

আলোচনা শেষে উরওয়া কুরায়েশদের নিকটে ফিরে গিয়ে বললেন,أَىْ قَوْمِ، وَاللهِ لَقَدْ وَفَدْتُ عَلَى الْمُلُوكِ، وَوَفَدْتُ عَلَى قَيْصَرَ وَكِسْرَى وَالنَّجَاشِىِّ وَاللهِ إِنْ رَأَيْتُ مَلِكًا قَطُّ يُعَظِّمُهُ أَصْحَابُهُ مَا يُعَظِّمُ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ مُحَمَّدًا‘হে আমার কওম! আল্লাহর কসম! আমি ক্বায়ছার, কিসরা, নাজাশী প্রমুখ সম্রাটদের দরবারে প্রতিনিধি হিসাবে গিয়েছি। কিন্তু কোন সম্রাট-এর প্রতি তার সহচরদের এমন সম্মান করতে দেখিনি, যেমনটি দেখেছি মুহাম্মাদের প্রতি তার সাথীদের সম্মান করতে’। অতঃপর তিনি রাসূল (সাঃ)-এর সাহাবীদের সম্মান প্রদর্শনের এবং ভক্তি-শ্রদ্ধার কতগুলি উদাহরণ পেশ করে বলেন, আল্লাহর কসম! তারা তাঁর থুথু হাতে ধরে মুখে ও গায়ে মেখে নেয়। তার ওযূর ব্যবহৃত পানি ধরার জন্য প্রতিযোগিতা করে। তার নির্দেশ পালনের জন্য সদা প্রস্তুত থাকে। তাঁর সাথে কথা বলার সময় সকলের কণ্ঠস্বর নীচু হয়ে যায়। অধিক সম্মান প্রদর্শনের কারণে তাঁর প্রতি কেউ পূর্ণভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে না’। তিনি বললেন,وَإِنَّهُ قَدْ عَرَضَ عَلَيْكُمْ خُطَّةَ رُشْدٍ، فَاقْبَلُوهَا ‘এই লোকটি (মুহাম্মাদ) তোমাদের নিকটে একটা ভাল প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তোমরা সেটা কবুল করে নাও’ (বুখারী হা/২৭৩১)।
সহীহ বুখারীতে বর্ণিত উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ভাষ্যকার আহমাদ ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন যে, উরওয়ার উপস্থিতিতে সাহাবীগণ ভক্তির এই বাড়াবাড়ি প্রদর্শন করেছিলেন, তাকে বাস্তবে একথা বুঝিয়ে দেবার জন্য যে, যারা তাদের নেতার ভালোবাসায় এতদূর করতে পারে ও এতবড় সম্মান ও ভক্তি দেখাতে পারে, তাদের সম্পর্কে উরওয়া কিভাবে ধারণা করতে পারেন যে, কুরায়েশদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হলে তারা রাসূলকে ছেড়ে পালিয়ে যাবে ও তাঁকে শত্রুদের হাতে সমর্পণ করবে? বরং বিভিন্ন গোত্রীয় যুদ্ধে স্রেফ গোত্রীয় স্বার্থের চাইতে তারা আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ও তাঁর দ্বীনের প্রতি সাহায্যের ক্ষেত্রে সবচাইতে অগ্রণী ও আপোষহীন। ইবনু হাজার বলেন, এই ঘটনায় বুঝা যায় যে, বৈধ উদ্দেশ্য হাছিলের জন্য যেকোন বৈধ পন্থা অবলম্বন করা যায়’।[ফাৎহুল বারী ৫/৪০২, হা/২৭৩১-৩৩] বস্ত্ততঃ এই ধরনের বাড়াবাড়ি আচরণের ঘটনা অন্য সময়ে দেখা যায়নি।
উরওয়া বিন মাসঊদ-এর রিপোর্ট পাওয়ার পর সেখানে উপস্থিত কুরায়েশ মিত্র বনু কেনানা গোত্রের বেদুঈন নেতা হুলাইস বিন আলক্বামা(حُلَيسُ بنُ عَلْقَمةَ) বললেন, আমাকে একবার যেতে দিন! অতঃপর নেতাদের অনুমতি নিয়ে তিনি গেলেন। দূর থেকে তাকে দেখে রাসূল (সাঃ) মন্তব্য করলেন,هُوَ مِنْ قَوْمٍ يُعَظِّمُونَ الْبُدْنَ ‘এ ব্যক্তি এমন একটি গোত্রের, যারা কুরবানীর পশুকে সম্মান করে’। অতএব তোমরা পশুগুলিকে দাঁড় করিয়ে দাও। কাছে এলে লোকটি কুরবানীর পশুসমূহ দেখে খুশীতে বলে উঠলো,سُبْحَانَ اللهِ مَا يَنْبَغِي لِهَؤُلاَءِ أَنْ يُصَدُّوا عَنِ الْبَيْتِ ‘সুবহানাল্লাহ! এইসব লোককে আল্লাহর ঘর থেকে বিরত রাখা উচিত নয়’। কথা বলেই লোকটি ফিরে গেল এবং কুরায়েশদের নিকটে তার উত্তম মতামত পেশ করল’ (বুখারী হা/২৭৩১)। কিন্তু নেতারা বললেন,اجْلِسْ فَإِنَّمَا أَنْتَ أَعْرَابِىٌّ لاَ عِلْمَ لَكَ ‘তুমি বস! তুমি একজন বেদুঈন মাত্র। তোমার কোন জ্ঞান নেই’ (আহমাদ হা/১৮৯৩০, সনদ হাসান)।
এরপর নেতারা মিকরায বিন হাফছ(مِكْرَزُ بنُ حَفْصٍ) কে পাঠালেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে দূর থেকে দেখেই মন্তব্য করলেন,هَذَا مِكْرَزٌ وَهْوَ رَجُلٌ فَاجِرٌ ‘লোকটি মিকরায। সে একজন দুষ্টু লোক’। অতঃপর রাসূল (সাঃ) তাকে সেসব কথাই বললেন, যা ইতিপূর্বে বুদাইল ও তার সাথীদের বলেছিলেন।
মিকরায কথা বলছেন। এমতাবস্থায় সুহায়েল বিন আমর(سُهَيلُ بنُ عَمْرو) এসে উপস্থিত হন। তাকে দেখে রাসূল (সাঃ) মন্তব্য করলেন,قَدْ سَهَّلَ اللهُ لَكُمْ أَمْرَكُمْ ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের বিষয়টি সহজ করে দিবেন’।[বুখারী হা/২৭৩১] অতঃপর সুহায়েল ও রাসূল (সাঃ)-এর মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়। অবশেষে তাঁরা একটি আপোষ প্রস্তাবে সম্মত হন। যা ‘হোদায়বিয়ার সন্ধি’ নামে পরিচিত।


হোদায়বিয়ার সন্ধি ও তার দফা সমূহ :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
১। মুহাম্মাদ এ বছর মক্কায় প্রবেশ না করেই সঙ্গী-সাথীসহ মদীনায় ফিরে যাবেন। আগামী বছর উমরাহ করবেন এবং মক্কায় তিনদিন অবস্থান করবেন। সঙ্গে সফরের প্রয়োজনীয় অস্ত্র থাকবে এবং তরবারি কোষবদ্ধ থাকবে। কুরায়েশরা তাদের প্রতি কোনরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না’। এই শর্তের ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) আপত্তি জানালে সুহায়েল বলেন, যাতে আরবরা একথা বলার সুযোগ না পায় যে, মুসলমানেরা আমাদের উপরে যবরদস্তি প্রবেশ করেছে। বরং ওটা আগামী বছর’। অতঃপর তিনি মেনে নেন’ (বুখারী হা/৩১৮৪; ২৭৩১)।
২। কুরায়েশদের কোন লোক পালিয়ে মুহাম্মাদের দলে যোগ দিলে তাকে ফেরৎ দিতে হবে। পক্ষান্তরে মুসলমানদের কেউ কুরায়েশদের নিকটে গেলে তাকে ফেরৎ দেওয়া হবে না’।[বুখারী হা/২৭৩১-৩২; আহমাদ হা/১৮৯৩০]
৩। দু’পক্ষের মধ্যে আগামী ১০ বছর যাবৎ যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এই সময় লোকেরা নিরাপদ থাকবে। কেউ কারু উপরে হস্তক্ষেপ করবে না’।[আহমাদ হা/১৮৯৩০; আবুদাঊদ হা/২৭৬৬; মিশকাত হা/৪০৪৬]
৪। যারা মুহাম্মাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবে, তারা তার দলে এবং যারা কুরায়েশদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবে, তারা তাদের দলে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় তাদের কারু উপরে অত্যাচার করা হলে সেটা সংশ্লিষ্ট দলের উপরে অত্যাচার বলে ধরে নেয়া হবে’ (আহমাদ হা/১৮৯৩০)।
উপরোক্ত দফাগুলিতে একমত হওয়ার পর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) হযরত আলীকে ডাকলেন। অতঃপর তাকে লেখার নির্দেশ দিয়ে বললেন, লিখ- ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’। সুহায়েল বলল, ‘রহমান’ কি আমরা জানি না। বরং লিখুন- ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আলীকে তাই-ই লিখতে বললেন। অতঃপর লিখতে বললেন-هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ ‘এগুলি হল সেইসব বিষয় যার উপরে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ সন্ধি করেছেন’। সোহায়েল বাধা দিয়ে বলল,لَوْ عَلِمْنَا أَنَّكَ رَسُولُ اللهِ لَمْ نَمْنَعْكَ وَلَبَايَعْنَاكَ ‘যদি আমরা জানতাম যে, আপনি আল্লাহর রাসূল, তাহলে আমরা আপনাকে আল্লাহর ঘর হতে বিরত রাখতাম না এবং অবশ্যই আমরা আপনার হাতে বায়‘আত করতাম’। অতএব লিখুন ‘মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ’। জবাবে রাসূল (সাঃ) বললেন,أَنَا وَاللهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَأَنَا وَاللهِ رَسُولُ اللهِ ‘আমি অবশ্যই আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ এবং আমি অবশ্যই আল্লাহর রাসূল’ (বুখারী হা/৩১৮৪)। অন্য বর্ণনায় এসেছে,وَإِنْ كَذَّبْتُمُونِى ‘যদিও তোমরা আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে থাক’ (বুখারী হা/২৭৩১)। অতঃপর তিনি আলীকে বললেন ‘রাসূলুল্লাহ’ শব্দ মুছে ‘মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ’ লিখতে। কিন্তু আলী বললেন,وَاللهِ لاَ أَمْحَاهُ أَبَدًا ‘কসম আল্লাহর! কখনোই আমি তা মুছবো না’। রাসূল (সাঃ) বললেন, فَأَرِنِيْهِ ‘তাহলে আমাকে স্থানটি দেখিয়ে দাও’। আলী বলেন, অতঃপর আমি তাঁকে দেখিয়ে দিলাম। তখন তিনি নিজ হাতে ওটা মুছে দিলেন’ (বুখারী হা/৩১৮৪)। অতঃপর তিনি বললেন,اكْتُبْ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ ‘লেখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ’।[মুসলিম হা/১৭৮৪; বুখারী হা/২৭৩১] এভাবে চুক্তিনামা লিখন সম্পন্ন হল।
চুক্তি সম্পাদনের পর বনু খোযা‘আহ রাসূল (সাঃ)-এর সাথে এবং বনু বকর কুরায়েশদের সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হল’ (আহমাদ হা/১৮৯৩০, সনদ হাসান)। অবশ্য বনু খোযা‘আহ আব্দুল মুত্ত্বালিবের সময় থেকেই বনু হাশেমের মিত্র ছিল, যা বংশ পরম্পরায় চলে আসছিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মু‘জিযা সমূহ পর্যালোচনা

  মু‘জিযা সমূহ পর্যালোচনা মু‘জেযা সমূহ মূলতঃ নবুঅতের প্রমাণ স্বরূপ। যা দু’ভাগে বিভক্ত। (১) আধ্যাত্মিক (معنوية) এবং (২) বাহ্যিক (حسية)। আধ্যা...