মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গাযওয়া নাজদ

 

গাযওয়া নাজদ

৪র্থ হিজরীর রবীউল আখের মাস। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সংবাদ পেলেন যে, বনু গাত্বফানের দু’টি গোত্র বনু মুহারিব ও বনু ছা‘লাবাহ মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেদুঈন ও পল্লীবাসীদের মধ্য হতে সৈন্য সংগ্রহ করছে। এ খবর পাওয়ার সাথে সাথে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নাজদ অভিমুখে যাত্রা করেন। এই আকস্মিক অভিযানে উদ্ধত বেদুঈনরা ভয়ে পালিয়ে যায় ও তাদের মদীনা আক্রমণের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। এই সময় মদীনার দায়িত্বে ছিলেন উসমান বিন ‘আফফান (রাঃ)’ (আর-রাহীক্ব ২৯৭-৯৮ পৃঃ)।


গাযওয়া বদর আখের :
━━━━━━━━━━━━━
৪র্থ হিজরীর শা‘বান মোতাবেক ৬২৬ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারী মাস। দেড় হাযার সৈন্য নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বদর অভিমুখে রওয়ানা হন। গত বছর ওহুদ যুদ্ধ থেকে ফিরে যাওয়ার সময় আবু সুফিয়ান আগামী বছর পুনরায় মদীনা আক্রমণ করবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন। তার হামলা মুকাবিলার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আগে ভাগেই বদর প্রান্তরে উপস্থিত হন। ওদিকে আবু সুফিয়ান ২০০০ সৈন্যের বাহিনী নিয়ে যথাসময়ে রওয়ানা হয়ে মার্রুয যাহরান পৌঁছে ‘মাজিন্নাহ’ (مَجِنَّة) ঝর্ণার নিকটে শিবির স্থাপন করেন। কিন্তু তিনি যুদ্ধ করার মনোবল হারিয়ে ফেলেন এবং বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মক্কায় ফিরে যেতে চান। তাতে সৈন্যদের সকলে এক বাক্যে সায় দেয় এবং সেখান থেকেই তারা মক্কায় ফিরে যায়।
৮ দিন অপেক্ষার পর শত্রুপক্ষের দেখা না পেয়ে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) মদীনায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। এরি মধ্যে মুসলমানেরা সেখানে ব্যবসা করে দ্বিগুণ লাভবান হন। উল্লেখ্য যে, বদর ছিল অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাণিজ্য কেন্দ্র। সংঘর্ষ না হলেও এই অভিযানকে বদরে আখের বা বদরের শেষ যুদ্ধ বলা হয়। আবু সুফিয়ানের পশ্চাদপসারণের ঘটনায় সারা আরবে মুসলিম শক্তির প্রতি সকলের শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হয়। সাথে সাথে মুসলমানদের মনোবল দারুণভাবে বৃদ্ধি পায়। এই যুদ্ধে যাওয়ার সময় মদীনার দায়িত্বে থাকেন আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহা (রাঃ) এবং যুদ্ধের পতাকাবাহী ছিলেন হযরত আলী (রাঃ)।[ইবনু হিশাম ২/২০৯, আর-রাহীক্ব ২৯৮-৯৯ পৃঃ]


গাযওয়া দূমাতুল জান্দাল :
━━━━━━━━━━━━━━━
৫ম হিজরীর ২৫শে রবীউল আউয়াল। খবর এলো যে, সিরিয়ার নিকটবর্তী দূমাতুল জান্দাল শহরের একদল লোক সিরিয়া যাতায়াতকারী ব্যবসায়ী কাফেলা সমূহের উপরে ডাকাতি ও লুটপাট করে। তারা মদীনায় হামলার জন্য বিরাট এক বাহিনী প্রস্তুত করছে। রাসূল (সাঃ) কালবিলম্ব না করে ১০০০ ফৌজ নিয়ে মদীনা হতে ১৫ রাত্রির পথ অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে কাউকে পেলেন না। শত্রুপক্ষ টের পেয়ে আগেই পালিয়ে গিয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সেখানে কয়েকদিন অবস্থান করেন ও চারদিকে ছোট ছোট সেনাদল প্রেরণ করেন। কিন্তু শত্রুদের কারু নাগাল পাওয়া যায়নি। অবশেষে কিছু গবাদিপশু নিয়ে তিনি ফিরে আসেন। এতে লাভ হয় এই যে, শত্রুরা আর মাথা চাড়া দেয়নি। তাতে ইসলাম প্রচারের শান্ত পরিবেশ তৈরী হয়। পথিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বনু ফাযারাহ গোত্রের নেতা ওয়ায়না বিন হিছন-এর সাথে সন্ধিচুক্তি করেন। এ যুদ্ধের সময় মদীনার আমীর ছিলেন সিবা‘ বিন ‘উরফুত্বাহ আল-গিফারী।[ইবনু হিশাম ২/২১৩; যাদুল মা‘আদ ৩/২২৩]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মু‘জিযা সমূহ পর্যালোচনা

  মু‘জিযা সমূহ পর্যালোচনা মু‘জেযা সমূহ মূলতঃ নবুঅতের প্রমাণ স্বরূপ। যা দু’ভাগে বিভক্ত। (১) আধ্যাত্মিক (معنوية) এবং (২) বাহ্যিক (حسية)। আধ্যা...