শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

কুরআনের মু‘জেযা হওয়ার প্রমাণ সমূহ পর্ব-২

 

কুরআনের মু‘জেযা হওয়ার প্রমাণ সমূহ পর্ব-২

১৬. সকলের পাঠযোগ্য (قابل القراءة للجميع) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআনই একমাত্র গ্রন্থ যা আল্লাহর কালাম হিসাবে কেবল নবী পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং উম্মতে মুহাম্মাদীর সবাই তা পাঠ করে ধন্য হতে পারে। মানুষ দুনিয়াতে তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে দেখতে পাবে না ঠিকই। কিন্তু তাঁর কালাম পাঠ করে ও শ্রবণ করে এক অনির্বচনীয় ভাবানুভূতিতে ডুবে যেতে পারে। ঠিক যেমন পিতার রেখে যাওয়া হস্তলিখিত পত্র বা লেখনী পাঠ করে প্রিয় সন্তান তার হারানো পিতার মহান স্মৃতিতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তাই কুরআনের পাঠক ও অনুসারী উম্মতে মুহাম্মাদীর চাইতে সৌভাগ্যবান জাতি পৃথিবীতে আর কেউ নেই। মূসা (আঃ)-এর সাথে আল্লাহ কথা বলেছিলেন ঠিকই। কিন্তু তওরাত সে কথার সমষ্টি নয়। তাই বাইবেলের অনুসারীরা আল্লাহর সরাসরি কালাম থেকে বঞ্চিত। আর বর্তমান বাইবেল তো আদৌ প্রকৃত তওরাত নয়। অন্যদিকে হিন্দুদের বেদ তো কেবল ব্রাহ্মণদেরই পাঠের অনুমতি রয়েছে, সাধারণ হিন্দুদের নেই।


১৭. স্মৃতিতে সুরক্ষিত (المحفوظ فى الذاكرة) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআনই একমাত্র ইলাহী কিতাব, যা মানুষের স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়েছে। কুরআনের পূর্বে কোন এলাহী গ্রন্থ মুখস্থ করা হয়নি। কুরআন আল্লাহ কর্তৃক হেফাযতের এটি একটি বড় প্রমাণ। পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে শহরে-গ্রামে, এমনকি নির্জন কারা কক্ষে বসে অগণিত মুসলমান কুরআনের হাফেয হচ্ছে এবং এইসব হাফেযে কুরআনের মুখে সর্বদা কুরআন পঠিত হচ্ছে। অন্যেরা সবাই পুরা কুরআনের হাফেয না হলেও এমন কোন মুসলমান দুনিয়াতে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে যে, কুরআনের কিছু অংশ তার মুখস্থ নেই। ২০০৫ সালের একটি হিসাবে জানা যায় যে, প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে বসবাসকারী ফিলিস্তীনীদের মধ্যে সে বছর চল্লিশ হাযার কিশোর-কিশোরী কুরআনের হাফেয হয়েছে’ (মাজাল্লা আল-ফুরক্বান (কুয়েত : জামঈয়াতু এহইয়াইত তুরাছিল ইসলামী) )। আলহামদুলিল্লাহ।


১৮. সহজে মুখস্থ হবার যোগ্য (قابل الحفظ باليسر) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআন এমনই এক গ্রন্থ যা সহজে মুখস্থ হয়ে যায়। একটু চেষ্টা করলেই তা মানুষের স্মৃতিতে গেঁথে যায়। মাতৃভাষা বাংলায় একশ’ পৃষ্ঠার একটা গদ্য বা পদ্যের বই হুবহু কেউ মুখস্থ করতে পারবে কি-না সন্দেহ। অথচ ছয়শো পৃষ্ঠার অধিক পুরো কুরআন মুখস্থকারী বাংলাভাষীর সংখ্যা নিঃসন্দেহে লাখ লাখ হবে।
ইহূদী, নাছারা, ফার্সী, হিন্দু, বৌদ্ধ কেউ কি একথা দাবী করতে পারবে যে, তাদের কেউ তাদের ধর্মগ্রন্থ আগাগোড়া মুখস্থ বলতে পারে? এ দাবী কেবল মুসলমানেরাই করতে পারে। আর কেউ নয়। ফালিল্লাহিল হাম্দ। বস্ত্ততঃ কুরআনকে হেফাযতের জন্য প্রদত্ত আল্লাহর ওয়াদার এটাও একটি জ্বলন্ত প্রমাণ।


১৯. সর্বাধিক পঠিত ইলাহী গ্রন্থ (الكةاب الإلهى الأكثر قراءة) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআন পৃথিবীর সর্বাধিক পঠিত ও প্রচারিত ইলাহী গ্রন্থ। আল্লাহ বলেন, وَكِتَابٍ مَسْطُوْرٍ، فِيْ رَقٍّ مَنْشُوْرٍ ‘কসম ঐ কেতাবের যা লিখিত হয়েছে’ ‘বিস্তৃত পত্রে’ (তূর ৫২/২-৩)। এখানে কুরআন মজীদের তিনটি বিশেষণ বর্ণিত হয়েছে- ‘কিতাব’ (গ্রন্থ), ‘মাসতূর’ (লিখিত) এবং ‘মানশূর’ (বিস্তৃত)। বস্ত্ততঃ কুরআন সর্বাধিক উচ্চারিত ও বিস্তৃত গ্রন্থ এ কারণে যে, তা মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হয়েছে। কুরআন প্রচারের জন্য কোন প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া অপরিহার্য নয়। যেকোন মুমিন কুরআন মুখস্থ করে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারে। ফলে যতদিন পৃথিবীতে মুসলমান থাকবে, ততদিন পৃথিবীতে কুরআন থাকবে ইনশাআল্লাহ।


২০. সত্য ও ন্যায় দ্বারা পূর্ণ (المملوء بالصدق والعدل) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআন এমনই একটি গ্রন্থ, যার প্রতিটি কথাই চূড়ান্ত সত্য ও ন্যায় দ্বারা পূর্ণ। পরিস্থিতির কারণে যে সত্যের কোন পরিবর্তন হয় না। আল্লাহ বলেন, وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدْقًا وَّعَدْلاً لاَ مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِهِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ ‘তোমার প্রভুর কালাম সত্য ও ন্যায় দ্বারা পূর্ণ। তাঁর কালামের পরিবর্তনকারী কেউ নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ’ (আন‘আম ৬/১১৫)।
মানুষ সাধারণতঃ অধিকাংশের মত অনুযায়ী চলে। তাই অধিকাংশের দোহাই দিয়ে মানুষ যেন সত্যকে এড়িয়ে না যায়, সে বিষয়ে সাবধান করে পরের আয়াতেই আল্লাহ স্বীয় নবীকে বলেন, وَإِنْ تُطِعْ أَكْثَرَ مَنْ فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَنْ سَبِيلِ اللهِ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ ‘অতএব যদি তুমি জনপদের অধিকাংশ লোকের কথা মেনে চল, তাহলে ওরা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তারা তো কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং তারা তো কেবল অনুমান ভিত্তিক কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১৬)।


২২. ব্যাপক অর্থবোধক গ্রন্থ (الكتاب ذو معنى شامل) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য এই যে, এর কোন আয়াত কোন বিশেষ উপলক্ষ্যে নাযিল হলেও তার অর্থ হয় ব্যাপক ও সর্বযুগীয়। যাতে সকল যুগের সকল মানুষ এর দ্বারা উদ্বুদ্ধ ও উপকৃত হয়। যেমন (১) সূরা ‘আলাক্ব’-এর ৬ থেকে ১৯ আয়াত পর্যন্ত মক্কার মুশরিক নেতা আবু জাহ্ল সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। কিন্তু এর বক্তব্য সকল যুগের ইসলামদ্রোহী নেতাদের প্রতি প্রযোজ্য। অমনিভাবে (২) আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, সূরা আহক্বাফ ১৫ আয়াতটি হযরত আবুবকর (রাঃ) সম্পর্কে নাযিল হয়। যেখানে আল্লাহ বলেন, حَتَّى إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِيْنَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِيْ أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِيْ أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِيْ فِيْ ذُرِّيَّتِي إِنِّيْ تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ ‘... অবশেষে যখন সে পূর্ণ বয়স্ক হয় এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয় তখন সে বলে, হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমাকে শক্তি দাও, যাতে আমি তোমার নে‘মতের শুকরিয়া আদায় করতে পারি, যা তুমি আমাকে ও আমার পিতামাতাকে দান করেছ এবং আমি তোমার পসন্দনীয় সৎকর্ম সমূহ করতে পারি। তুমি আমার জন্য আমার সন্তানদের মধ্যে কল্যাণ দান কর। আমি তোমার দিকে ফিরে গেলাম (তওবা করলাম) এবং আমি তোমার আজ্ঞাবহদের অন্যতম’ (কুরতুবী, তাফসীর সূরা আহক্বাফ ৪৬/১৫)।
এই দো‘আ কবুল করে আল্লাহ তাকে এমন তাওফীক দান করেন যে, তাঁর চার পুরুষ অর্থাৎ তিনি নিজে, তাঁর পিতা-মাতা, সন্তানাদি ও পৌত্রাদি ক্রমে সবাই মুসলমান হয়ে যান। সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে কেবল আবুবকর (রাঃ)-কেই আল্লাহ এই সৌভাগ্য দান করেন। কিন্তু আয়াতের উদ্দেশ্য হল সকল মুসলমানকে এই নির্দেশনা দেওয়া যে, বয়স চল্লিশ বছর হয়ে গেলে তার মধ্যে পরকাল চিন্তা প্রবল হওয়া উচিত এবং বিগত গোনাহসমূহ হতে তওবা করা উচিত। আর সন্তান-সন্ততিকে দ্বীনদার ও সৎকর্মশীল করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টার সাথে সাথে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত। নির্দিষ্ট ও ব্যাপক অর্থবোধক এই দ্বৈত ভাবধারা কুরআনী ভাষা ও বর্ণনাভঙ্গির এক অনন্য দিক, যা অন্য কোন ধর্মগ্রন্থে নেই।
(২) কুরআনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর ‘মাছানী’ (مَثَانِي) নীতি। অর্থাৎ যেখানেই জান্নাতের সুসংবাদ। তার পরেই জাহান্নামের ভয় প্রদর্শন। যেমন আল্লাহ বলেন, أَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَلَهُمْ جَنَّاتُ الْمَأْوَى نُزُلًا بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ- وَأَمَّا الَّذِينَ فَسَقُوا فَمَأْوَاهُمُ النَّارُ كُلَّمَا أَرَادُوا أَنْ يَخْرُجُوا مِنْهَا أُعِيدُوا فِيهَا وَقِيلَ لَهُمْ ذُوقُوا عَذَابَ النَّارِ الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تُكَذِّبُونَ- ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্মসমূহ সম্পাদন করে, তাদের জন্য তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়ন স্বরূপ রয়েছে বসবাসের জান্নাত’। ‘আর যারা অবাধ্যতা করে, তাদের ঠিকানা হল জাহান্নাম। যখনই তারা সেখান থেকে বের হতে চাইবে, তখনই তাদেরকে সেখানে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং বলা হবে, জাহান্নামের যে শাস্তিকে তোমরা মিথ্যা বলতে, তার স্বাদ আস্বাদন করো’ (সাজদাহ ৩২/১৯-২০)। কুরআনের প্রায় প্রতি পৃষ্ঠায় এরূপ প্রমাণ মিলবে। যাতে পাঠকের মনে বারবার জান্নাত ও জাহান্নামের দোলা দেয়। যাতে তার মধ্যে জাহান্নাম থেকে বাঁচার আকুতি সৃষ্টি হয় ও জান্নাতের প্রতি আকাংখা প্রবল হয়। এভাবে সে প্রকাশ্য ও গোপন সকল পাপ থেকে ফিরে আসতে উদ্বুদ্ধ হয়।


২৩. পূর্ববর্তী সকল ইলাহী কিতাবের সত্যায়নকারী (المصدق لجميع الكةب الإلهية السابقة) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআনই একমাত্র গ্রন্থ, যা পূর্ববর্তী সকল এলাহী কিতাবের সত্যায়ন করেছে এবং সেগুলির সুন্দর শিক্ষাসমূহের প্রশংসা করেছে। এজন্য কুরআনের একটি নাম হল مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ ‘পূর্ববর্তী কিতাব সমূহের সত্যায়নকারী’।[বাক্বারাহ ২/৯৭; ফাত্বির ৩৫/৩১; আহক্বাফ ৪৬/৩০]


২৪. জিন ও ইনসানকে চ্যালেঞ্জকারী (متحدى إلى الجن والإنس) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআনই একমাত্র গ্রন্থ যা জিন ও ইনসান উভয় জাতিকে চ্যালেঞ্জ করেছে অনুরূপ একটি গ্রন্থ রচনার জন্য এবং তারা যে ব্যর্থ হবে, সে কথাও বলে দিয়েছে। আল্লাহ বলেন, قُلْ لَئِنِ اجْتَمَعَتِ الْإِنْسُ وَالْجِنُّ عَلَى أَنْ يَأْتُوْا بِمِثْلِ هَذَا الْقُرْآنِ لاَ يَأْتُوْنَ بِمِثْلِهِ وَلَوْ كَانَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ ظَهِيْرًا ‘তুমি বলে দাও, যদি মানুষ ও জিন জাতি একত্রিত হয়ে পরস্পরের সহযোগিতায় কুরআনের ন্যায় একটি কিতাব নিয়ে আসতে চায়, তবুও তারা তা পারবে না’ (ইসরা ১৭/৮৮)। এমনকি তারা অনুরূপ একটি ‘সূরা’ (বাক্বারাহ ২/২৩-২৪) বা ১০টি আয়াতও (হূদ ১১/১৩-১৪) রচনা করতে পারবে না। অর্থাৎ একটিও নয়। এভাবে কুরআন মক্কায় মুশরিকদের চারবার[ইউনুস ১০/৩৮; হূদ ১১/১৩; ইসরা ১৭/৮৮] এবং মদীনায় ইহূদী-নাছারাদের একবার (বাক্বারাহ ২/২৩-২৪) চালেঞ্জ করেছে। কিন্তু ঐ চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সাহস তখনও কারু হয়নি, আজও হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে না। এটা কুরআনের জীবন্ত মু‘জেযা হওয়ার অন্যতম দলীল। যা পৃথিবীর সর্বযুগের সকল বিদ্বানকে পরাজিত করেছে ও তাদেরকে মাথা নত করতে বাধ্য করেছে।


২৫. বাতিল হতে নিরাপদ(السالم من الأباطيل) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআনই একমাত্র গ্রন্থ, যা সর্বাবস্থায় বাতিল ও মিথ্যা হতে নিরাপদ। কুরআনের শত্রুরা এতে একটি বর্ণও ঢুকাতে পারেনি বা বের করতে পারেনি এবং পারবেও না কখনো। যেমন আল্লাহ বলেন, لاَ يَأْتِيْهِ الْبَاطِلُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَلاَ مِنْ خَلْفِهِ تَنْزِيْلٌ مِنْ حَكِيْمٍ حَمِيْدٍ ‘তার সম্মুখ দিয়ে বা পিছন দিয়ে কখনোই বাতিল প্রবেশ করে না। এটি প্রজ্ঞাময় ও মহা প্রশংসিত সত্তার পক্ষ হতে অবতীর্ণ’ (হামীম সাজদাহ ৪১/৪২)। তিনি বলেন, وَبِالْحَقِّ أَنْزَلْنَاهُ وَبِالْحَقِّ نَزَلَ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ مُبَشِّرًا وَنَذِيْرًا ‘আমি সত্যসহ এ কোরআন নাযিল করেছি এবং সত্যসহ এটা নাযিল হয়েছে। আমি তো আপনাকে শুধু সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি (বনু ইসরাঈল ১৭/১০৫)।


২৬. কুরআন থেকে মুখ ফিরানোই হল জাতির অধঃপতনের মূল কারণ(الإعراض عن القرآن هو السبب الحقيقى لانحطاط الأمة) :
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
কুরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াকেই উম্মতের অধঃপতনের কারণ বলে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) স্বীয় পালনকর্তার নিকটে ওযর পেশ করে বলবেন, وَقَالَ الرَّسُوْلُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوْا هَذَا الْقُرْآنَ مَهْجُوْرًا ‘হে আমার পালনকর্তা! আমার কওম এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছিল’ (ফুরক্বান ২৫/৩০)। অন্যদিকে যালেমদের কৈফিয়ত হবে আরও করুণ।
যেমন আল্লাহ বলেন, وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلاً- يَا وَيْلَتَى لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلاَنًا خَلِيلاً- لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُولاً- ‘যেদিন যালেম নিজের দু’হাত কামড়িয়ে বলবে, হায়! যদি আমি (দুনিয়াতে) রাসূল-এর সাথে সৎপথ অবলম্বন করতাম’! ‘হায়! যদি আমি অমুককে (শয়তানকে) বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম’! ‘আমাকে তো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকটে উপদেশ (কুরআন) এসে যাবার পর। বস্ত্ততঃ শয়তান মানুষের জন্য মহা প্রতারক’ (ফুরক্বান ২৫/২৭-২৯)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মু‘জিযা সমূহ পর্যালোচনা

  মু‘জিযা সমূহ পর্যালোচনা মু‘জেযা সমূহ মূলতঃ নবুঅতের প্রমাণ স্বরূপ। যা দু’ভাগে বিভক্ত। (১) আধ্যাত্মিক (معنوية) এবং (২) বাহ্যিক (حسية)। আধ্যা...