মুতা পরবর্তী যুদ্ধসমূহ
১. সারিইয়া যাতুস সালাসেল(سرية ذات السلاسل) : ৮ম হিজরীর জুমাদাল আখেরাহ। মুতার যুদ্ধ শেষে মদীনায় ফেরার পরপরই আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ)-এর নেতৃত্বে প্রথমে ৩০০ এবং পরে আবু ওবায়দাহ ইবনুল জাররাহ (রাঃ)-এর নেতৃত্বে ২০০ মোট ৫০০ সৈন্যের এই দলটি সিরিয়া সীমান্তে বনু কুযা‘আহ(بنو قُضَاعَةَ) গোত্রের বিরুদ্ধে প্রেরিত হয়। এরা রোমকদের সঙ্গে মিলে মদীনায় হামলার প্রস্তুততি নিচ্ছিল। মুসলিম বাহিনী উক্ত গোত্রের ‘সালসাল’ (سَلْسَل) নামক প্রস্রবণের নিকটে অবতরণ করে বিধায় অভিযানটির নাম হয় ‘যাতুস সালাসেল’। শত্রুরা ভীত হয়ে পালিয়ে যায়। শেষোক্ত সাহায্যকারী বাহিনীতে হযরত আবুবকর ও উমর (রাঃ) ছিলেন। কিন্তু আমর ইবনুল ‘আছকে সেনাপতি করার উদ্দেশ্য ছিল এই যে, তাঁর দাদী ছিলেন অত্র এলাকার ‘বালী’ (بلىّ) গোত্রের মহিলা। সেই সুবাদে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। যাতে তারা রোমকদের সঙ্গে যোগ দিয়ে মুসলমানদের জন্য হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়।[ইবনু হিশাম ২/৬২৩; যাদুল মা‘আদ ৩/৩৪০; আর-রাহীক্ব ৩৯২ পৃঃ]
এ যুদ্ধে আবুবকর ও উমর (রাঃ)-এর মত প্রথম যুগের জ্যেষ্ঠ সাহাবীগণের উপরে নতুন মুসলিম আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ)-কে সেনাপতি নিয়োগ করার মধ্যে প্রমাণিত হয় যে, সংশ্লিষ্ট ও পারিপার্শ্বিক কারণে অনেক সময় অনুত্তম ব্যক্তিকে উত্তম ব্যক্তিগণের উপরে নেতৃত্ব অর্পণ করা যায়।
এই যুদ্ধে প্রচন্ড শীতে মৃত্যুর আশংকায় আমর ইবনুল ‘আছ সূরা নিসা ২৯ আয়াতের আলোকে ইজতিহাদ করে ফরয গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করে সালাতে ইমামতি করেন। এ খবর রাসূল (সাঃ)-এর নিকটে পৌঁছলে তিনি হেসে ফেলেন। কিন্তু কিছু বলেননি’ (আবুদাঊদ হা/৩৩৪, সনদ সহীহ)। অর্থাৎ তিনি তাঁর এই ইজতিহাদের স্বীকৃতি প্রদান করেন। এতে বুঝা যায় যে, এমন অবস্থায় এটি করা জায়েয।
২. সারিইয়া আবু ক্বাতাদাহ(سرية أبي قةادة) : ৮ম হিজরীর শা‘বান মাস। নাজদের বনু গাত্বফানের শাখা ‘মুহারিব’ (مُحَارِب) গোত্রের লোকেরা মদীনায় হামলার জন্য তাদের এলাকায় খাযেরাহ (خَضِرَة) নামক স্থানে সেনাদল প্রস্তুত করছে জানতে পেরে ১৫ জনের এই দলটি প্রেরিত হয়। তারা তাদের অনেককে হত্যা করেন ও বাকীরা পালিয়ে যায়। অনেক গণীমত হস্তগত হয়। তারা এ সফরে ১৫ দিন মদীনার বাইরে থাকেন।[আর-রাহীক্ব ৩৯৩ পৃঃ; ইবনু সা‘দ ২/১০০-১০১]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন